Homeপ্রধান খবর

ভালুকার এম এ ওয়াহেদ ব্রিটিশ সরকারের ওবিই সম্মাননায় ভূষিত

  খলিলুর রহমান: ব্রিটিশ সরকারের সর্বোচ্চ অফিসার অফ ব্রিটিশ এম্পয়ার ও.বি.ই সম্মননা উপাধিতে ভূষিত হয়েছেন ময়মনসিংহের ভালুকার বিশিষ্ট দানবী

জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে মোর্শেদ আলমের শুভেচ্ছা
৫শত কোটি টাকার প্রকল্প উপস্থাপন- ভালুকায় উন্নয়ন প্রকল্প পরিদর্শন ও আলোচনা সভা
বাকৃবি’র গবেষণা মানবদেহে ক্ষতিকর ২৫টির অধিক বিপদজনক বালাইনাশক শনাক্ত

 

খলিলুর রহমান:

ব্রিটিশ সরকারের সর্বোচ্চ অফিসার অফ ব্রিটিশ এম্পয়ার ও.বি.ই সম্মননা উপাধিতে ভূষিত হয়েছেন ময়মনসিংহের ভালুকার বিশিষ্ট দানবীর, শিক্ষানুরাগী, সমাজসেবক এম এ ওয়াহেদ। ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত সর্বোচ্চ সম্মান সূচক পদকের (ও.বি.ই) “স্বর্ণপদক” একটি। ব্রিটিশরাণী এলিজাবেথ ফাউন্ডেশন কর্তৃক প্রতি বছর ব্রিটেনের রানীর জন্মদিন উপলক্ষে স্বেচ্ছায় সমাজসেবা, জনকল্যাণ মূলক কাজ, আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও ব্যবসায়িক খাতে যাদের বিশেষ অবদান রয়েছে এমন ব্যক্তিদের কাজের  স্বীকৃতি স্বরূপ বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ এই খেতাবে ভূষিত করা হয়।

এবছর পাপুয়া নিউগিনি সরকারের আর্থসামাজিক উন্নয়ন এবং ব্যবসায়িক খাতে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ এম এ ওয়াহেদ “ও.বি.ই”উপাধিতে ভূষিত হয়েছেন। পদক প্রাপ্ত ব্যক্তিগণ পোস্ট-নমিনাল অক্ষর “ও.বি.ই”  ব্যবহারের অধিকার পাবেন। একই সাথে ও.বি.ই পদক ধারী ব্যক্তিগণ ব্রিটিশ সরকারের কাছে বিশেষ মর্যাধার ব্যক্তি হিসেবে মূল্যায়িত হয়ে থাকেন। এখন থেকে এম এ ওয়াহেদ নিজ নামের পাশে ও.বি.ই লিখতে পারবেন। এর আগে এমএ ওয়াহেদ নিউইয়র্কে ইউএস বাংলাদেশ চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ইউএসবিসিসিআই) আয়োজিত ইউএসবিসিসিআই গেøাবাল বিজনেস এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড ২০২৪-এ “সেরা বিদেশী অর্থ ঋণদাতা পুরস্কার” অর্জন কনে।

আলহাজ্ব  এম এ ওয়াহেদ ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা উপজেলার ডাকাতিয়া ইউনিয়নের আঙ্গারগাড়া গ্রামের সমাজসেবক মৃত আলহাজ্ব  ছাকেন আলীর সন্তান। তিনি এলাকায় শিক্ষানুরাগী ও দানবীর হিসেবে খ্যাত। এম এ ওয়াহেদ ১৯৮৮ সালে অনার্স শেষ করে পাপুয়া নিউগিনিতে যান। সেখানে পাপুয়ানিউগিনি ইউনিভার্সিটি থেকে এমবিএ পাশ করে পাপুয়া নিউগিনিতে সরকারী স্কুল অ্যান্ড কলেজে ৫বছর শিক্ষকতা করেন। এর পর প্রথমে একটি ফাস্ট ফুডের দোকান প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ব্যবসা শুরু করেন।  পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে প্রতিষ্ঠা করেন কয়েকটি কোম্পানী। তাঁর ঐসব প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে একশ’র মতো বাংলাদেশি রয়েছেন। যাদেরকে তিনি তাঁর নিজ খরচে বিদেশে নিয়েছেন।

এ ছাড়াও ওই দেশের প্রায় ৫শতাধিক লোক তাঁর প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছে। পাপুয়া নিউগিনিতে বর্তমানে তিনি ফরেন ইনভেস্টার হিসাবে আছেন। এমএ ওয়াহেদ পাপুয়া নিউগিনি সরকারের আর্থসামাজিক উন্নয়নে ও ব্যবসায়িক খাতে বিশেষ অবদান রাখার পাশাপাশি, নিজ জন্ম ভূমি ময়মনসিংহের ভালুকায় শিক্ষা প্রসার ও আর্থসামাজিক উন্নয়নে বিশেষ অবদান রেখে চলেছেন। একজন সফল রেমিটেন্সযোদ্ধা হিসাবে এমএ ওয়াহেদ ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক তিনবার পুরুস্কৃত হয়েছে।

এম এ ওয়াহেদ ভালুকায় প্রায় ৩শতাধিক ব্যক্তিকে পবিত্র হজ্বব্রত পালন করিয়েছেন। ডাকাতিয়া ইউনিয়নের আঙ্গারগাড়া ইউনাইটেড উচ্চ বিদ্যালয়ের বাউন্ডারি ওয়াল ও জমিসহ তিন তলা বিশিষ্ট প্রশাসিক ভবন, দৌলা আল কুদ্দুস দাখিল মাদ্রাসার একতলা প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ সহ উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় প্রায় এক হাজার মসজিদ মাদ্রাসায় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন। তিনি উপজেলার ৩২০জন হতদরিদ্র পরিবারকে টিনের ঘর নির্মাণ করে দিয়েছেন। উপজেলা অর্থহীন পরিবারের লোকজনকে চিকিৎসা খরচ, ছেলে-মেয়েদের বিয়ে দেয়া, লেখা-পড়ার খরচ দিয়ে আসছেন। তিনি ডাকাতিয়া ইউনিয়নের সকল হাই স্কুল থেকে এসএসসিতে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত সকল ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে ১০ হাজার টাকা করে বৃত্তি প্রদান করে আসছেন। উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের ৪র্থ শ্রেনীর ১২০জন শিক্ষার্থীর মাঝে প্রতিবছর উপবৃত্তি প্রদান করেন।  শিক্ষার প্রসারে এটিই ভালুকায় প্রথম ও বৃহত আকারে শিক্ষা বৃত্তি প্রদান।

করোনাকালীন সময় ফিল্ড হাসপাতাল,ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৫টি আইসিও বেড, চাহিদা অনুযায়ী অক্সিজেন সিলিন্ডার প্রদান, ভালুকা উপজেলার ২০হাজার মানুষের মাঝে নগদ অর্থ,খাদ্য সামগ্রি, স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রি, সেনিটাইজার ও মাস্ক বিতরণ করে মানবিক সমাজসেবায় এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন এম এ ওয়াহেদ।

নূরে আলম সিদ্দিকী জিকু বলেন, ডাকাতিয়া ইউনিয়নের গর্বিত সন্তান আলহাজ্ব এম ওয়াহেদ সাহেব (ও.বি.ই) উপাধিতে ভূষিত হয়ে ডাকাতিয়া তথা ভালুকাবাসীকে গর্বিত করেছেন।আমি উনার উত্তর উত্তর সাফল্য, সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ূ কামনা করছি।

আলহাজ্ব এম ওয়াহেদ (ও.বি.ই) উপাধিতে ভূষিত হয়ে বাংলাদেশের সুনাম অর্জন করায় বীরমুক্তিযোদ্ধা সন্তান আলহাজ্ব জাকির হোসেন সিবলী তাঁর ফেসবুকে এক পোষ্টে ভালুকা উপজেলা ভালুকাবাসী ও তাঁর ব্যাক্তিগত পক্ষ থেকে প্রাণঢালা অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানান।

বীরমুক্তিযোদ্ধা সন্তান সাদিকুর রহমান তালুকদার বলেন, এম এ ওয়াহেদ এর এই পুরুস্কার অর্জন ভালুকাবাসীকে গর্বিত করেছে। ভালুকার সন্তান হিসেবে আমি গর্বিত।

সমাজকর্মী অধ্যাপক মো. তারিকল ইসলাম খান বলেন, এম এ ওয়াহেদ এর এই পুরুস্কার অর্জন নিঃসন্দেহে ভালুকাবাসীর জন্য গর্বের। আমি তাঁর উত্তর উত্তর সাফল্য কামনা করছি।

পদক প্রাপ্তির অনুভূতি জানাতে গিয়ে এম এ ওয়াহেদ বলেন, ব্রিটিশ সরকারের এই সম্মননা আমার কাছে অনেক বড় পাওয়া। আমার কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ব্রিটিশ সরকারের এই সম্মাননা পেয়ে আমি অত্যন্ত আনন্দিত, গর্বিত ও অনুপ্রাণিত। পুরস্কারটি আমাকে আরোও বেশি জনকল্যাণ মূলক কাজ করতে উৎসাহী করবে। এমএ ওযাহেদ বলেন, আমি বিশ্বাস করি মানুষ মানুষের জনন্য, তাই  পুরুষ্কারের জন্য নয়, আমি মানুষের সেবাকরি মানবিক মূল্যবোধ থেকে। বলতে পারেন এটি আমার পারিবারিক শিক্ষা। আমার এই পুরুষ্কার ভালুকার সর্বস্তরের সাধারণ মানুষের প্রতি উৎস্বর্গ করলাম।

COMMENTS

WORDPRESS: 0
DISQUS: 0