নিজস্ব প্রতিনিধি: গৌরব ও উৎসবের আবহে উদযাপিত হলো ময়মনসিংহ মুক্ত দিবস। মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত এ দিনটি উপলক্ষে বুধবার সকালে শহরের বিভিন্ন

নিজস্ব প্রতিনিধি:
গৌরব ও উৎসবের আবহে উদযাপিত হলো ময়মনসিংহ মুক্ত দিবস। মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত এ দিনটি উপলক্ষে বুধবার সকালে শহরের বিভিন্ন স্থানে আয়োজন করা হয় জাতীয় পতাকা উত্তোলন, বর্ণাঢ্য র্যালি এবং আলোচনা সভার।
ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসন ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের স্বাগত আয়োজনে নগরবাসী স্মরণ করে স্বাধীনতার অবিস্মরণীয় এই দিনকে।
সকালে নগরীর ছোট বাজারের মুক্তমঞ্চে সমবেত হন মুক্তিযোদ্ধা, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ সাধারণ মানুষ।
জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন এবং বেলুন ও পায়রা উড়ানোর মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে দিনের কর্মসূচির উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মো: সাইফুর রহমান।
উদ্বোধনী পর্ব শেষে প্রশাসনের কর্মকর্তা, মুক্তিযোদ্ধা, বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি ও স্থানীয় নাগরিকদের অংশগ্রহণে মুক্তমঞ্চ থেকে একটি র্যালি বের হয়। ছোট বাজার থেকে শুরু হয়ে র্যালিটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে এডভোকেট তারেক স্মৃতি অডিটোরিয়াম প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে অনুষ্ঠিত হয় মুক্ত দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার জন কেনেডি জাম্বিল বলেন, ১০ ডিসেম্বর ময়মনসিংহ মুক্ত দিবস—এটি আমাদের সবার জন্য এক গৌরবময় আনন্দের দিন। দীর্ঘ নয় মাসের সশস্ত্র লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধারা এই দেশকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রে রূপান্তর করেছেন।
তাদের আত্মত্যাগেই আমরা পেয়েছি লাল-সবুজের পতাকা, স্বাধীন মানচিত্র।
তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বীর সেনানিদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান এবং সম্ভ্রম হারানো মা- বোনদের আত্মত্যাগকে ইতিহাসের অনন্ত প্রেরণার উৎস হিসেবে উল্লেখ করেন। একই সঙ্গে তিনি ২৪ জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণ করেন এবং যারা এখনো অসুস্থ, তাদের দ্রæত আরোগ্য কামনা করেন।
জন কেনেডি জাম্বিল বলেন, আপনাদের ত্যাগ-তিতিক্ষার কারণেই আমরা আজ স্বাধীন দেশের নাগরিক। প্রতিদিন যে লাল-সবুজের সূর্য আমরা দেখি, সেটি আপনাদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত। জাতি আপনাদের প্রতি চিরঋণী।
আগামী প্রজন্মের প্রতি আহŸান জানিয়ে তিনি বলেন, দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দুর্নীতি, মিথ্যা, অপসংস্কৃতি ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার থেকে শান্তিপূর্ণ, বৈষম্যহীন ও উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি সকল মুক্তিযোদ্ধার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন।
অনুষ্ঠানের সমাপনী বক্তব্য দেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রেজা মো: গোলাম মাসুম। আলোচনা সভায় অতিথি বক্তারা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, ময়মনসিংহের মুক্তির গল্প এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগ-তিতিক্ষার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। প্রবীণ মুক্তিযোদ্ধারা নিজেদের অভিজ্ঞতা শোনিয়ে নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করেন।
COMMENTS